খানসামা প্রতিনিধি: তীব্র শীতে টানা কয়েকদিনের শৈত্যপ্রবাহের কারনে সাদা সোনা খ্যাত রসুন নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন দিনাজপুরের খনসামা উপজেলার কৃষকরা। তবে কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় আশানুরূপ ভালো ফলন ও দাম পাবেন বলে মনে করছেন তারা। শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার গোয়ালডিহি, হাসিমপুর,কাচিনীয়া, গুলিয়ারা ও বালাপাড়া গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে রসুনের চাষাবাদ হয়েছে। গত কয়েক সপ্তাহ আগে জেঁকে বসা শীত ও ঘন কুয়াশায় রসুনের গাছের পাতা হলুদ হয়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় ছিল। তবে এখন আবহাওয়া ভালো হয়ে যাওয়ায় সাদা সোনা খ্যাত রসুনে আশার আলো দেখছেন তারা। গত বছরের থেকে এবার রসুনে ব্যাপক সাফল্যের আশা কৃষি বিভাগের।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে রসুন চাষ হয়েছে ১ হাজার ৬২০ হেক্টর জমিতে। যা গত বছরে ছিল ১ হাজার ৫০০ হেক্টর। কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বিঘা জমিতে রসুন চাষে বীজ, সার, সেচ, হাল ও পরিচর্যা বাবদ এ বছর খরচ হয়েছে ১ লাখ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। এবার বীজের দাম বেশি হওয়ায় খরচটা বেড়ে গেছে। আর প্রতি বিঘায় ফলন হয় ৫৫-৬০ মণ। প্রতি মণের বর্তমান বাজার মূল্য ৭-৮ হাজার টাকা। তাই খরচ বেশি হওয়ার পরও ভালো লাভের আশা করছেন তাঁরা। তবে গত কয়েক সপ্তাহ আগে তীব্র শৈত্যপ্রবাহের কারণে পাতা হলুদ হওয়ায় দুশ্চিন্তায় ছিল কৃষকরা। তবে উপজেলা কৃষি বিভাগের সুপরামর্শে ও আবহওয়া ভলো হয়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তা থেকে কাটিয়ে উঠছেন রসুন চাষীরা।
গোয়ালডিহি জমির শাহপাড়া এলাকার কৃষক আমিনুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিন আগে রসুন গাছের পাতার রং এমন পরিবর্তন হয়ে গেছিল দূর থেকে দেখলে মনে হয় সরিষার খেত। তবে কিছুদিন থেকে আবহওয়া ভালো থাকায় কীটনাশক স্প্রে ও পরামর্শ পরিচর্যা করে এ অবস্থার উন্নতি হয়েছে। আমি এবছর এক বিঘা জমিতে রসুন চাষ করছি। বেশ ভালো ফলন হবে এবার, দামও গতবছরের থেকে অনেক বেশি।
খামারপাড়া ইউনিয়নের কৃষক মাহফুজ আলম বলেন, এ বছর দেড় বিঘা জমিতে রসুন আবাদ করেছি তীব্র শৈত্য প্রবাহের কারণে দুশ্চিন্তায় থাকলেও সবকিছু এখন ঠিক হয়ে গেছে আশা করি ভালো ফলন ও দাম পাবো। ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের কৃষক করুনা কান্ত সেন বলেন, প্রতিবছরেই আমি রসুন আবাদ করি। এবারো আবাদ করেছি এবছ দাম ভালো থাকায় ভালো কিছুর আশা করছি। খামারপাড়া ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শ ম জাহিদুল ইসলাম বলেন, কৃষি বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা সব সময় রসুনসহ বিভিন্ন খেত পরিদর্শন ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি। আশা করি এবছর রসুনে ব্যাপক সফলতা পাবে।
এ বিষয়ে খানসামা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার হাবিবা আক্তার বলেন, কিছুদিন আগে শৈত্যপ্রবাহের কারণে রসুন খেত হলুদ বর্ণধারন করেছিল কিন্তু এখন আবহাওয়া ভালো হয়ে যাওয়ায় ফলনও ভালো হবে আশা করছি। আমরা কৃষিবিভাগ কৃষকদের সচেতনতার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এবং কৃষকদের যে কোনো প্রয়োজনে কৃষি বিভাগের পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।